
সব করদাতা ২০২৫-২৬ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন। অনলাইনে রিটার্ন জমার আগে প্রথমে করদাতাকে নিবন্ধন নিতে হবে। নিবন্ধন নিতে করদাতার নিজের কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ও বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর লাগবে। এ দুটি দিয়ে নিবন্ধন করে অনলাইনে রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।
নিচে ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করা হলো — কীভাবে অনলাইনে (e-Return পোর্টাল) সহজেই আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন — ধরা যাক, আপনি একজন স্বাভাবিক ব্যক্তি (সেলারি, বাড়ি ভাড়া, সঞ্চয় ইত্যাদির আয় রয়েছে)।
✅ প্রাথমিক প্রস্তুতি
রিটার্ন দাখিল করার আগে নিচের কিছু জিনিস প্রস্তুত রাখতে হবে:
| বিষয় | বিবরণ |
| TIN (Taxpayer Identification Number) | আপনার বৈধ TIN থাকতে হবে। |
| বায়োমেট্রিকভাবে ভেরিফায়েড মোবাইল নম্বর | আপনার মোবাইল নম্বরটি NID-এর সঙ্গে যুক্ত থাকা জরুরি। |
| প্রয়োজনীয় তথ্য ও ডকুমেন্ট | যেমন: বেতন স্লিপ, ব্যাংক বিবৃতি, ভাড়া আয়, সঞ্চয় প্রকল্প (DPS, FDR ইত্যাদির) এবং যেকোনো কর কর্তন (TDS / Advance Tax) সংক্রান্ত রেকর্ড |
| ইন্টারনেট সংযোগ ও কম্পিউটার/স্মার্টফোন | অনলাইনে কাজ করার জন্য প্রয়োজন |
✅ ধাপ ১: ই–রিটার্ন সিস্টেমে রেজিস্ট্রেশন / লগইন
০১. বাংলাদেশ এনবিআর (NBR) এর e-Return পোর্টাল এ যান — www.etaxnbr.gov.bd
০২. যদি আপনি প্রথমবার রিটার্ন দাখিল করছেন, তাহলে “Register / Sign Up” অপশন নির্বাচন করুন।
- আপনার TIN এবং সেই মোবাইল নম্বর (যে নম্বরটি NID-এর সঙ্গে যুক্ত) প্রবেশ করতে হবে।
- ক্যাপচা পূরণ ও OTP যাচাই করা হবে।
- সফলভাবে যাচাই হলে, একটি পাসওয়ার্ড তৈরি করবেন।
০৩. লগইন করতে হলে আপনার TIN + পাসওয়ার্ড + ক্যাপচা কোড ব্যবহার করবেন।
✅ ধাপ ২: রিটার্ন ফর্ম নির্বাচন ও তথ্য পূরণ
e-Return সিস্টেমে লগইন করার পর “Return Submission” বা “চলমান রিটার্ন দাখিল” অপশন পাবেন।
(ক) রিটার্নের ধরন নির্বাচন
- Single-Page Return: যদি আপনার আয় সীমিত (নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে) হয়, তাহলে Single-Page রিটার্ন নির্বাচন করতে পারেন।
- Regular e-Return: যদি আপনার আয় অনেক উৎস থেকে হয়, সম্পদ বেশি হয়, বা অন্যান্য জটিলতা থাকে, তাহলে Regular রিটার্ন নির্বাচন করবেন।
(খ) ট্যাক্স অ্যাসেসমেন্ট তথ্য
- রিটার্নের বছর (Assessment Year) নির্বাচন করুন।
- ন্যূনতম তথ্য যেমন: রিটার্ন স্কিম, অবস্থা (e.g., রেসিডেন্ট/নন-রেসিডেন্ট), আয়কর-বহির্ভূত আয় থাকলে স্ট্যাটাস ইত্যাদি।
(গ) আয়ের বিবরণ (Income Details)
“Heads of Income” বিকল্প থেকে আপনার বিভিন্ন আয়ের উৎস নির্বাচন করুন, যেমন:
- বেতন (Salary)
- ভাড়া আয় (House Property / Rent)
- ব্যবসা / পেশার আয় (Business / Profession)
- অন্য উৎস থেকে আয় (Interest, Dividend, Capital Gain ইত্যাদি)
প্রত্যেক আয় উৎসের জন্য আয় এবং খরচ (যদি খরচ দাবি করা হয়) প্রবেশ করুন।
(ঘ) অতিরিক্ত তথ্য ও খরচ
- জমি, গাড়ি, সম্পদ ইত্যাদির তথ্য (যদি প্রযোজ্য)
- বিনিয়োগ, বিমা, সঞ্চয় প্রকল্প (যেমন DPS, ভবিষ্যত সঞ্চয় ইত্যাদি) — যেসব বিনিয়োগ আয়কর ছাড় বা রিবেট পাওয়ার সুযোগ দেয়
- পূর্বে প্রদত্ত কর (Advance Tax / TDS) তথ্য প্রদান করুন
✅ ধাপ ৩: রিভিউ ও জমা দেওয়া
০১. আপনার দেওয়া সব তথ্য ভালোভাবে পরখ করুন — ভুল আয়, খরচ, বিনিয়োগ ইত্যাদি থাকলে সংশোধন করুন।
০২. একবার জমা দেওয়ার পর ফিরে সংশোধন করা সম্ভব নাও হতে পারে।
০৩. “Submit” বাটনে ক্লিক করুন।
০৪. সফল হলে একটি Acknowledgment Receipt বা “Reference ID” সাপেক্ষে নিশ্চিতকরণ দেখানো হবে — এটি সংরক্ষণ করে রাখুন।
✅ ধাপ ৪: কর পরিশোধ (যদি বাকি থাকে)
- যদি আপনার দায়বদ্ধ আয়কর থাকুক, তাহলে অনলাইনে A-Challan / ইলেকট্রনিক পেমেন্ট টুল ব্যবহার করে পরিশোধ করুন।
- কিছু ক্ষেত্রে, আপনার কর ইতিমধ্যেই উৎসে কাটা (TDS) হয়ে থাকতে পারে, যা ইতিমধ্যে দায় থেকে বিয়োগ হবে।
⏳ গুরুত্বপূর্ণ সময়সীমা ও নিয়ম
- সাধারণত, রিটার্ন দাখিলের শেষ তারিখ এবং কর পরিশোধের সময়সীমা — নভেম্বর ৩০ (আয় বছরের শেষের পরবর্তী বছরের)
- ২০২৫–২৬ সালের জন্য, NBR ঘোষণা করেছে যে বেশিরভাগ ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য অনলাইন রিটার্ন দাখিল করা আবশ্যক হবে।
- যদি কারিগরি সমস্যার কারণে অনলাইন রিটার্ন দাখিল করা না যায়, তাহলে উপযুক্ত কারণসহ কর বিভাগের উচ্চতর অফিসে আবেদন করে কাগজভিত্তিক রিটার্ন দাখিল করার সুযোগ থাকতে পারে (নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে)


